নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বক্তব্যটি তার ব্যক্তিগত। এ বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগে আলোচনা হয়নি, এমনকি ১৪ দলেও আলোচনা হয়নি।
বুধবার (০৭ জুন) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার ১৪ দলের সমন্বয়ক আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু বলেছেন, প্রয়োজনে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক, আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই সুষ্ঠু নির্বাচন করার বাধা কোথায়? কিভাবে সেটা নিরসন করা যায়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্তব্যটি দিয়েছেন সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। তার এই বক্তব্য নিয়ে আমাদের দলের ও সরকারের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি ১৪ দলের মধ্যেও কোনো আলোচনা হয়নি।
ড. হাছান বলেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কাগজ বা গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে তিনি ঠিক সেভাবে বলেননি। যেভাবেই আসুক এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত। দল, সরকার এমনকি ১৪ দল কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।
ড. হাছান বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। তারা নির্বাচনের রেফারি। তারা যদি সংলাপে ডাকে আমরা যাবো।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল, কানাডার আদালত কর্তৃক রায়প্রাপ্ত সন্ত্রাসী, অর্থাৎ সিলমারা সন্ত্রাসী। আদালতের রায়ে একেবারে সিলমারা সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল।
শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়ার ছেলে মারা যাওয়ার পর তার প্রতি সহানুভুতি জানাতে তার বাড়ির দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরেও দরজা খুলেননি, সেই দলের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসেছেন এবং আলোচনায় বসার ইচ্ছা ব্যক্তও করেছিলেন। যারা এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস চালায়, মানুষের ওপর হামলা চালায় তাদের সঙ্গে আলোচনা কতটুকু ফলপ্রসূ বা আলোচনা করে কি হবে সেটিই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।
তাহলে কি আলোচনার সুযোগ নেই ? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখুন বিএনপির যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রসঙ্গ থাকে সেটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। নির্বাচন আয়োজক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের ডাকে আমরা নির্বাচন কমিশনে যাবো।
বিএনপির সঙ্গে অতীতে আলোচনার অভিজ্ঞতায় বলা যায়, এ সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচন প্রতিহত করতে চায়, যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায় তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কি হবে, সেটি হচ্ছে বড় প্রশ্ন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি চমৎকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। বিশ্বের কাছে উদাহরণ স্বরুপ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক সেটি আমরাও চাই।
তিনি বলেন, বিএনপি আসলে নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে… তারা আসলে নির্বাচন প্রতিহত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সেই কথাটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবার বলেছেন। কিন্তু এবার আর তাদের পক্ষে নির্বাচন প্রতিহত করা কিংবা বর্জন করা সম্ভবপর হবে না। দেশে অবশ্যই একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি রাজনেতিক দল, তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেই পারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না। কিন্তু তাদের উদ্দেশ তা নয়, তাদের উদ্দেশ হচ্ছে নির্বাচন ভন্ডু ল করে দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা। কিন্তু নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণই হলো মুখ্য বিষয়। জনগণ যদি ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তাহলেই সেটি অংশগ্রহণমূলক একটি ভালো নির্বাচন।
নির্বাচনে আসতে বিএনপি যদি খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত দেয়, তাহলে সরকারের অবস্থান কি হবে, এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে চাইলেই সরকার মুক্তি দিতে পারবেন না, উনি আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এটি তো আদালতের এখতিয়ার। সরকার চাইলেই তো মুক্তি দিতে পারবেন না।