Take a fresh look at your lifestyle.

বিমা ছাড়া কোনো গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না

0

নিজস্ব প্রতিবেদক :

মোটরসাইকেল, গাড়ি, বাস, ট্রাকসহ সড়কে চলাচলকারী সব ধরনের যানবাহনের জন্য একসময় বিমা করা আইনগতভাবেই বাধ্যতামূলক ছিল। ২০১৮ সালে আইনটি তুলে দেওয়া হয়।

পাঁচ বছর পরে এসে আবারও সব রকমের যানবাহনের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এবারে অবশ্য নিয়ম করা হচ্ছে, বিমা করা না থাকলে প্রতিটি যানবাহনের জন্য মালিককে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে। আর আইন না মানলে তখন মামলা করবে পুলিশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ ধরনের বিধান করার তথ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সারসংক্ষেপ পাঠাতে যাচ্ছে। এতে যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, বিশ্বের কোনো দেশেই বিমা ছাড়া সড়কে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। সারসংক্ষেপে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮–এর একটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাবও থাকছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় বিমা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিমা না করা কোনো যানবাহন যাতে চলাচল করতে না পারে, সে জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সেদিন তিনি বলেছেন, ‘আমরা দেখব, যথাযথ বিমা ছাড়া সড়কে কোনো যানবাহন যেন না চলে। এ ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকেই আইন সংশোধনের ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হয়েছে।

চলতি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সড়ক ও মহাসড়কে চলাচলকারী মোটরসাইকেল, গাড়ি, বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের মোট যানবাহনের সংখ্যা ৫৬ লাখ ৬১ হাজার ৪১৮টি।

বিমা করা বাধ্যতামূলক না হওয়ায় এসব গাড়ি থেকে প্রতিবছর ৮৭৮ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত থাকছে সরকার। এর মধ্যে কর ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাবদ ৮৪৯ কোটি টাকা এবং স্ট্যাম্প ডিউটি হিসেবে আরও ২৮ কোটি ধরা হয়েছে। আইন সংশোধনের পক্ষে যুক্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসব তথ্যও পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় বিমা দিবসের অনুষ্ঠানের পরই যানবাহনের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ প্রণয়নে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অমল কৃষ্ণ মণ্ডলকে সভাপতি করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। ওই কমিটি ইতিমধ্যে দুটি বৈঠক করে বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন করে এতে একটি উপধারা সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপধারাটি হবে এমন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ৬০(২) ধারার বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহলে তা হবে একটি অপরাধ এবং এই অপরাধের জন্য তিনি অনধিক তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’

অবশ্য জাতীয় বিমা দিবসের আগেই প্রস্তাবটি দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, বিদ্যমান আইনে বিমা করার কথা বলা থাকলেও তা পরিপালনের জন্য দণ্ডের ব্যবস্থা নেই। ফলে আইন মেনে বিমা করার ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ কম।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বলছে, আইডিআরএর প্রস্তাব অনুযায়ীই আইন সংশোধন হবে। তবে এ জন্য প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় হিসেবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দরকার।

জানতে চাইলে বিমা কোম্পানির চেয়ারম্যানদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন  বলেন, ‘পরিবহন মালিকদের প্রভাবে ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইনটি করা হয়েছিল। তাতে বিমা ছাড়া রাস্তায় গাড়ি চলাচলের সুযোগ রাখা হয়। সেই থেকে আমরা জানিয়ে আসছি যে এতে বিমা খাত যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। আশার কথা হল, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর শেষ পর্যন্ত আইনে একটি ধারা যুক্ত হচ্ছে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.