উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে যাত্রা শুরু করেছে স্পেশাল পার্সেল ট্রেন। শুক্রবার (১৫ মে) সকাল ৯টায় জেলার চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে খুলনার উদ্দেশে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে বন্ধ রয়েছে রেলওয়ে পরিবহন সেবা। এই অবস্থায় কৃষিপণ্য পরিবহনে চিলাহাটি-খুলনা-চিলাহাটি রেলপথে একজোড়া বিশেষ পার্সেল সার্ভিস ট্রেন চালু করায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীসহ রেলকর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শুক্রবার ট্রেনটি চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে ১০০ কেজি ওজনের ২৮ বস্তা কাঁচামরিচ, ৫০ কেজি ওজনের ১০ বস্তা সুপারি এবং ৩০ কেজি ওজনের ছয় ক্যারেজ টমেটো এবং ডোমার স্টেশন থেকে ৭০ কেজি ওজনের ৩৮ বস্তা কাঁচামরিচ ও বাঁশের বান্ডিল নিয়ে গেছে।
এছাড়া নীলফামারী রেলস্টেশন হতে ৭০ কেজি ওজনের পাঁচ বস্তা কাঁচামরিচ, ১০০ কেজি ওজনের দুই বস্তা আঁদা, পোনা মাছের ড্রাম ১০টি ও একটি পরিবারের আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। জেলার সৈয়দপুর রেলস্টেশন হতে ৭০ কেজি ওজনের ২৮ বস্তা কাঁচামরিচ ও ৩০ বস্তা বাইসাইকেলের নতুন যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া হয়। এসব পণ্য জেলার চারটি রেলস্টেশন থেকে খুলনা, দৌলতপুর, যশোর, ঈশ্বরদী, দর্শনা হল্ট ও চুয়াডাঙ্গায় যাচ্ছে।
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মারুফ জামান কোয়েল জানান, উত্তাঞ্চলের কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সহজে পরিবহনের জন্য এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এটি আরও আগে থেকে চালু করলে ভালো হতো।’ তিনি বলেন, ‘বিশেষ পার্সেল ট্রেনটি প্রতিদিন উভয় দিক থেকে চালু রাখলে ব্যবসায়ীরা বেশি উপকৃত হবে।’
পশ্চিমাঞ্চল রেলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুল আওয়াল জানান, পার্সেল ট্রেনটি শুক্রবার সকাল ৯টায় চিলাহাটি থেকে কৃষি পণ্যসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে খুলনা অভিমুখে ছেড়ে এসেছে। এটি খুলনায় আজ রাত সাড়ে আটটায় এসে পৌঁছাবে। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকাল ৯টায় খুলনা স্টেশন থেকে আবারও চিলাহাটি গিয়ে পৌঁছাবে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে।
আব্দুল আওয়াল জানান, ট্রেনটি উভয় পথে ডোমার, নীলফামারী, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট, জামালগঞ্জ, আক্কেলপুর, তিলকপুর, সান্তাহার, আহসানগঞ্জ, নলডাঙ্গারহাট, নাটোর, আব্দুলপুর, ঈশ্বরদী, ভেড়ামারা, পোড়াদহ, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা, দর্শনাহল্ট, আনসারবাড়িয়া, সাফদারপুর, কোটচাঁদপুর, যশোর, নওয়াপাড়া, দৌলতপুর ও খুলনা স্টেশনে থামবে।
এছাড়া যে সব স্টেশনে ট্রেনটির দাঁড়ানোর কথা নয়, সে সব স্টেশনে যদি কৃষিপণ্য থাকে, তবে ওই রেলস্টেশনের মাস্টারকে আগাম জানিয়ে রাখলে ট্রেনটি সেখানেও থেমে পণ্য তুলে নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্দিষ্ট গন্তব্যে খাদ্যসহ জরুরি পণ্য পৌঁছে দিতে রেলের এই পার্সেল ট্রেন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রথমবারের মতো খুলনা-চিলাহাটি-খুলনা রুটে এ ধরনের পরিবহন ট্রেন চালু হলো। ট্রেনটির রয়েছে পাঁচটি লাগেজ ভ্যান ও একটি ব্রেকভ্যান। চাহিদা থাকলে আরও লাগেজভ্যান সংযুক্ত করা হবে। সপ্তাহে ট্রেনটি খুলনা থেকে শনিবার ও চিলাহাটি থেকে রবিবার বন্ধ থাকবে। বাকি দিনগুলোতে স্বাভাবিক সেবা পাবে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা। তবে ট্রেনটিতে কোনও যাত্রী পরিবহন করা হবে না।’